অর্থনৈতিক রিপোর্টার
চলমান অস্থিরতায় আবারও বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে দেশের শেয়ারবাজার। গত ১০ কার্যদিবসে পুঁজি হারিয়ে দলে দলে বাজার ছাড়ছেন বিনিয়োগকারীরা। সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) তথ্য অনুযায়ী, এ সংখ্যা ৬১ হাজার ২৫০ জন।
১৯৯৬ সাল থেকে শেয়ারবাজারে যাতায়াত তানভির ফাহিমের। বড় আশা নিয়ে নিজের জমানো ১৪ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন তিনি। শুরুর দিকে মাসে ১৫-২০ হাজার টাকা লাভ করতে পারলেও, বর্তমানে লাভ তো দূরের কথা মূলধন কমতে কমতে ঠেকেছে মাত্র দেড় লাখ টাকায়। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারের বর্তমান যে অবস্থা তাতে লাভ তো দূরের কথা, নিজের মূলধন নিয়ে বাড়ি ফেরাই দায়। এটা এক ধরনের নিশ্চিত ক্ষতির বিনিয়োগে পরিণত হয়েছে। তাও প্রতিদিন এখানে আসা হয়, আমার মতো যারা প্রায় সব হারিয়েছে, যদি কোনোভাবে আশার আলো দেখা যায়। তার মতো হাজার হাজার বিনিয়োগকারী এখন শেয়ারবাজার ছাড়ছেন। সিডিবিএল’র তথ্য বলছে, গত ১০ কার্যদিবসে বিও অ্যাকাউন্ট খালি করে বাজার ছেড়েছেন ৬১ হাজার ২৫০ জন বিনিয়োগকারী।
হিসাব বলছে, সূচকের টানা পতন আর বিনিয়োগবিমুখ প্রবণতায় গত ১০ কার্যদিবসে ২০২ পয়েন্টেরও বেশি- সূচকের পতনের সঙ্গে ঢাকার পুঁজিবাজার মূলধন হারিয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ৬১৫ কোটি টাকা। বিনিয়োগকারী ও ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তারা বলছেন, চলমান অস্থিরতা পুঁজিবাজারে পুঞ্জীভূত আস্থাহীনতার সমস্যাকে আরও প্রকট করে তুলছে। পুঁজিবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির প্রভাব শেয়ারবাজারে। তাই বাজার বাঁচাতে নতুন করে কর্মকৌশল সাজানোর পরামর্শ তাদের।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ বলেন, পুঁজিবাজারের এই শঙ্কার কথা গত ১০ বছর ধরেই বিভিন্ন বিশ্লেষকরাই ধারণা করে আসছিলেন। সরকার ইদানিংকালে একটু মনোযোগ দিচ্ছে। তবে ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারছে না। যদি জাতীয় অর্থনীতির কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন হয়, তবে আশা করি শেয়ারমার্কেটেও পরিবর্তন আসবে। এদিকে সপ্তাহ জুড়ে বড় পতন হলেও চতুর্থ কর্মদিবস গতকাল বুধবার কিছুটা ইতিবাচক খবর দিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)।
প্রধান সূচকটি ১০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ২৮০ পয়েন্টে। অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক ৪৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৯৩ পয়েন্ট।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata